স্লোভাকিয়ার প্রথম মহিলা প্রেসিডেন্ট হচ্ছেন কাপুতোভা

রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা বলতে তেমন কিছুই নেই তাঁর ঝুলিতে। পেশা ছিল আইনের। সেই অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়েই দুর্নীতি দমনের কথা বলে হাই-প্রোফাইল প্রার্থী মারোস সেফকোভিচকে হারিয়ে স্লোভাকিয়ার প্রথম মহিলা প্রেসিডেন্ট হচ্ছেন জ়ুজ়ানা কাপুতোভা। শাসক দলের মনোনীত প্রার্থী ছিলেন সেফকোভিচ। এই নিয়ে দ্বিতীয় বার ভোটের দৌড়ে নেমেছিলেন তিনি। ইউরোপিয়ান কমিশনের ভাইস প্রেসিডেন্টের পদেও রয়েছেন সেফকোভিচ। 

কিন্তু প্রেসিডেন্ট নির্বাচনকে ‘ভাল’ আর ‘খারাপের’ লড়াই বলে কাপুতোভা মানুষের মন জয়ের চেষ্টা করেছেন। দেশে এমনিতেই প্রশাসনিক দুর্নীতি নিয়ে ক্ষোভ চরমে উঠেছিল। যাকে কাজে লাগাতে পেরেছেন কাপুতোভা। শাসক দলের প্রার্থী পেয়েছেন ৪২ শতাংশ ভোট আর  মহিলা-প্রার্থী পেয়েছেন ৫৮ শতাংশ ভোট।

স্লোভাকিয়ায় ভোটের আগে গত বছর এক সাংবাদিক খুন নিয়ে তোলপাড় হয় দেশের রাজনীতি। অনুসন্ধানমূলক কাজে নিযুক্ত ইয়ান কুসিয়াক নামে ওই সাংবাদিক রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে অপরাধের যোগ নিয়ে খবর করছিলেন। গত বছর ফেব্রুয়ারিতে তাঁর হবু স্ত্রীর সঙ্গে তাঁকে বাড়িতেই গুলি করে মারা হয়। পাঁচ জনের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ আনা হয়। এই ঘটনার পরে শাসক দলের প্রধান এবং তদানীন্তন প্রধানমন্ত্রী রবার্ট ফিকোকে ইস্তফা দিতে বাধ্য করা হয়।

ইউরোপীয় ইউনিয়নপন্থী কাপুতোভা বলেন, নির্বাচনের ময়দানে তাঁর আসার অন্যতম কারণ কুসিয়াকের মৃত্যু। এমনিতে স্লোভাকিয়ায় প্রেসিডেন্টের ভূমিকা ‘আনুষ্ঠানিক’। তবে প্রধানমন্ত্রীর নিয়োগ তাঁর হাতে। প্রবীণ আইনজীবী ও বিচারপতিদের নিয়োগ সংক্রান্ত প্রক্রিয়ায় ভিটো দেওয়ার ক্ষমতাও প্রেসিডেন্টের আছে। 

বেআইনি ভাবে জমি ভরাট নিয়ে ১৪ বছর ধরে একটি মামলা লড়েছিলেন কাপুতোভা। দক্ষ আইনজীবী হিসেবে তখন থেকেই পরিচিতি বাড়ে তাঁর। বিবাহবিচ্ছিন্না, দুই সন্তানের মা, ৪৫ বছর বয়সি কাপুতোভা উদারপন্থী প্রোগ্রেসিভ স্লোভাকিয়া পার্টির সদস্য। তবে এই দলের কোনও আসনই নেই পার্লামেন্টে। প্রেসিডেন্টের আসনে বসার আগে দল ছেড়ে দেবেন বলে জানিয়েছেন তিনি।

তবে এ দেশে সমকামী বিবাহ এবং দত্তক নেওয়া এখনও অবৈধ। উদারপন্থী কাপুতোভা সমকামী মানুষদের অধিকার নিয়ে কথা বলতে চান। বক্তৃতায় শুধু স্লোভাক নয়, কাপুতোভা কথা বলেছেন হাঙ্গেরীয়, চেক এবং রোমা ভাষাতেও। যার সুবাদে সব সংখ্যালঘু গোষ্ঠীর কাছে তিনি পৌঁছে গিয়েছেন সহজেই।

Comments (0)
Add Comment